রক্তাক্ত দেহ, হাহাকার, আতঙ্ক। গাজার নাসের হাসপাতালে এটাই যেন নিয়মিত দৃশ্য। বাইরে অ্যাম্বুলেন্স, ট্রাক, এমনকি গাধায় টানা গাড়ি ছুটে আসছে, ক্ষত-বিক্ষত মানুষের দেহ বহন করে। কারো শরীরে প্রাণের স্পন্দন, কেউ একেবারে নিথর। আর এক শিশুর কান্না, ‘আমার মাকে এনে দাও’।
সে মা ফিরে আসবে না। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে এক স্কুলে গতকাল ইসরায়েলি বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন তিনি। সেই স্কুলে আশ্রয় নেওয়া আরও অনেকের মতো। গাজা, যেন এক রক্তাক্ত ক্ষত।
“গাজার কোথাও নিরাপদ নেই। গাজাবাসীর আশ্রয় নেওয়ার কোনো জায়গা আর বাকি নেই।” জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ কর্মকর্তা লিন হেস্টিংসের কথাগুলো যেন গাজার বাস্তব চিত্র তুলে ধরে।
এই নিরাপত্তাহীনতার কারণ, ইসরায়েলি হামলা। প্রথমে উত্তর থেকে দক্ষিণে পালিয়েছিল গাজাবাসী। এখন দক্ষিণ থেকে আরও দক্ষিণে। ইসরায়েলি বাহিনীর ট্যাংক ঢুকেছে গাজার হৃদয়ে। স্থল অভিযান চলছে উত্তরের পাশাপাশি দক্ষিণেও। আকাশ থেকে বোমার বৃষ্টি অব্যাহত।
গত ৭ অক্টোবর থেকে চলছে এই যুদ্ধ। ১৫ হাজারের বেশি নিহত, ৭০ শতাংশ নারী ও শিশু। ফিলিস্তিনের অন্যান্য এলাকাতেও নিহতের সংখ্যা বাড়ছে। এক দিকে এই হত্যাযজ্ঞ, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিশ্চুপতা।
“কেয়ামতের মতো পরিস্থিতি” বলেছেন জাতিসংঘের কর্মকর্তা। গাজার মানুষের আশ্রয়ের জায়গা পুরো উপত্যকার এক-তৃতীয়াংশেরও কম। কাতারের আমির ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যা অভিযোগ তুলেছেন। যুক্তরাষ্ট্রও আহ্বান জানাচ্ছে, গাজাবাসীদের নিরাপত্তা দিতে।
কিন্তু ইসরায়েল থামছে না। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, দক্ষিণে আরও শক্তি বাড়াবে তারা। গাজায় যেন শান্তির আশা দূরে দূরে। অব্যাহত রয়েছে রক্তের নদী, কান্না আর আহাজারি।