চুয়াডাঙ্গা-১ (আলমডাঙ্গা ও সদরের একাংশ) আসনের নির্বাচনী প্রচারণার সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলি আহাম্মেদ হাসানুজ্জামানসহ নৌকা প্রতীকের পাঁচ কর্মী-সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল শনিবার রাত সোয়া ১০টার দিকে উপজেলার ভান্ডারদহ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমারের প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী মো. আবদুল মালেক ভোরে সদর থানায় মামলা করলে পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। মামলায় ২২ জনের নাম উল্লেখসহ ১০০ থেকে ১২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—সদর উপজেলার নতুন ভান্ডারদহ গ্রামের আবদুল্লাহ আল ফারুক, সুমন হোসেন, যুগিরহুদার গ্রামের হাফিজুর রহমান ও ফুলবাড়ি গ্রামের জেহের আলী।
স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালা আজ রোববার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলি আহাম্মেদ হাসানুজ্জামানের নির্দেশে নৌকার কর্মীরা আমাকে এবং আমার সঙ্গে থাকা কর্মীদের গাড়ি দীর্ঘসময় ধরে আটকে রাখেন। তাঁরা নৌকার পক্ষে এবং আমার বিপক্ষে স্লোগান ও অশালীন গালাগাল দেন। গাড়ি থেকে নেমে এলে তাঁরা মারমুখী আচরণ করেন এবং একজন মাথায় পিস্তল ধরে অপহরণের চেষ্টা করেন, তবে পুলিশের ভূমিকায় রক্ষা পাই।’
দিলীপ কুমার বলেন, ‘আমার ধারণা ছিল একজন প্রার্থী হিসেবে সম্মান পাব, কিন্তু তারা তা করেনি।’
স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকে হেনস্তার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে চারজনকে আটক করে। ভান্ডারদহ এলাকায় উত্তেজনা চলাকালেই রাত সোয়া ১০টার দিকে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলি আহাম্মেদ হাসানুজ্জামান তাঁর অনুসারীদের নিয়ে সেখানে আসেন। তাঁরা দিলীপ কুমারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন ও হুমকি দেন। এ সময় পুলিশের হাতে আটক চারজনকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন তাঁরা।
পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে আটক চারজনকে সদর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ঘটনার বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মালেক জানান, ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করা হয়েছে। মামলার পর তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল ওহাব বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে আমি অবগত নই। তবে ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে, ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালা। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই ধরনের সহিংসতায় আমি হতাশ। আমি নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করছি, তারা যেন এই ধরনের সহিংসতা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেন।’